আজ শুক্রবার, ১২ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৭শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

প্রার্থী চূড়ান্ত করতে রাতভর বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক

প্রার্থী চূড়ান্ত করতে রাতভর

প্রার্থী চূড়ান্ত করতে রাতভরনিজস্ব প্রতিবেদক:

আগামী ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনকে সামনে রেখে দলীয় প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করতে রাতভর বৈঠক করছে বিএনপির স্থায়ী কমিটির নেতারা। দলটির স্থায়ী কমিটির নেতারাই দলের মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য। শুক্রবার (২৩ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে গুলশানের বিএনপির চেয়ারপারসেনর কার্যালয়ে দলটির স্থায়ী কমিটির নেতাদের বৈঠক শুরু হয়। রাত সাড়ে ১টায় এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বৈঠক চলছে।

বৈঠকে উপস্থিত রয়েছেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, মির্জা আব্বাস, ড. মঈন খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খানসহ অনেকে।

বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের সূত্র জানা গেছে, আজ শুক্রবারে রাতের মধ্যে সারাদেশের ৩০০ সংসদীয় আসনের বিএনপির প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করা হবে। ফলে রাত ২-৩ টা পর্যন্ত এই বৈঠক চলতে পারে। তবে প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করা হলেও প্রকাশ করা হবে আগামী সপ্তাহে।

এদিকে দলটির অসমর্থিত একটি সূত্র জানায়, বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই বৈঠকের সঙ্গে লন্ডনে অবস্থানরত দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও যুক্ত রয়েছেন।

বৈঠকের বিয়য়ে জানতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির একাধিক নেতাকে ফোন করাও হলেও কেউ এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে এই বিষয়ে দলটির চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বিএনপির মনোনয়ন বোর্ডের সদস্যরা চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে কাজ করছেন নির্বাচন নিয়ে।’

বিএনপির প্রভাবশালী একটি সূত্রে জানা গেছে, ২০ দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শরিকদের জন্য ৫০ থেকে ৬০টি আসন বাকি রেখে প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করা হবে। তবে শরিক ও ঐক্যফ্রন্টের জন্য রাখা আসনগুলোতেও বিএনপির প্রাথমিক প্রার্থী থাকবে। পরে এই দুই জোটের সঙ্গে সমঝোতার মাধ্যমে যেসব আসনে তাদের প্রার্থী থাকবে সেখানে বিএনপির দলীয় কোনও প্রার্থী থাকবে না।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির একটি সূত্র জানায়, এবারের বিএনপির প্রার্থী তালিকায় দুটি চমক থাকবে। এরমধ্যে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ছাড়া দলের কেউ একাধিক আসনে নির্বাচন করবে না এবং এক পরিবার থেকে একজনেই মনোনয়ন পাবে। দ্বিতীয়ত, এই নির্বাচনে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে বিএনপি দলীয় প্রার্থী করবে।

প্রসঙ্গত. আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রার্থী হতে বিএনপির একাধিক নেতা ২টি সংসদীয় আসন থেকে মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, চেয়ারপারসেন উপদেষ্টা আতাউর রহমান ঢালি, দলের সহ- আন্তার্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট ফাহিমা নাসরীন মুন্নী।

একই পরিবারেরও ২ থেকে ৩ জন মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। কুমিল্লার দুটি আসন থেকে মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও তার ছেলে খন্দকার মারুফ হোসেন। ঢাকার দুটি আসন থেকে মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন মির্জা আব্বাস ও তার স্ত্রী আফরোজা আব্বাস। নোয়াখালী-৩ আসন থেকে মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন দলের দলের ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু ও তার স্ত্রী শামীমা বরকত লাকী। এছাড়া বিএনপির একাধিক নেতা ও একই পরিবারের একাধিক সদস্য একাধিক আসন থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন।

জানা গেছে- বিএনপির প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করার পর আগামী রবিবার ২৫ নভেম্বর জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটি ও ২০ দলীয় জোটের সঙ্গে বৈঠক করে তাদের সঙ্গে আসন সমঝোতা করবে দলটি।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন প্রাত্যাশী ৪ হাজার ৫৮০ জন মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছিল। তবে গত ১৮ থেকে ২১ নভেম্বর প্রার্থী হতে আগ্রহী আড়াই হাজারের মতো মনোনয়ন প্রত্যাশী সাক্ষাৎকার দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

নির্বাচনের তফসিল অনুযায়ী, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ ২৮ নভেম্বর। প্রার্থিতা যাচাই-বাছাই ২ ডিসেম্বর। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ৯ ডিসেম্বর। ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।